ভারত ও পাকিস্তান কেউই যেন কাউকে দেখতে পারে না। তাদের সম্পর্কটা এরকমই সাপে-নেউলে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দু’দেশের চিরবৈরী মনোভাবকে আরও উসকে দিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে দুই দেশ থেকে নেওয়া হয়েছে পাল্টাপাল্টি কিছু পদক্ষেপও। নতুন খবর হলো, পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছে ভারত। এর কয়েক ঘণ্টা পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে এক লাইনের একটি বার্তা শেয়ার করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে জয়শঙ্কর লিখেছেন, বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের প্রতি জিরো টলারেন্স বা শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। খবর এনডিটিভির।
এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) পাকিস্তান ও ভারতীয় সেনাদের মধ্যে রাতভর ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে তিনজন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এরইমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেছেন, সীমান্ত আগ্রাসনের জবাবে পাকিস্তান বিমানবাহিনী কমপক্ষে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
অন্যদিকে ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের মূল্য বিশ্ব বহন করতে পারবে না। কারণ ইতোমধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। অন্যদিকে, চলছে গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ। এমন সময়ে আরেকটি যুদ্ধ দেখতে চায় না বিশ্ববাসী।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। হামলার পর দিল্লি সোজাসুজি এর দায় চাপায় ইসলামাবাদের ঘাড়ে। দুই দেশ থেকে নেওয়া হয় বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপও।
পরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি থামাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয় ইরান ও রাশিয়া। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে জম্মু-কাশ্মীরে হামলার দুই সপ্তাহ পর পাকিস্তানে হামলা চালালো ভারত।