ব্যস্ত শহরে রাস্তার ধারে পড়ে প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী। অথচ, তার চরম কষ্টের দিকে ভ্রুক্ষেপ করার সময় নেই যেন কারও। অসহায় সেই নারীকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলেন একের পর এক পথচারী। এমন নির্মম এক পরিস্থিতির মধ্যেই পৃথিবীর আলো গায়ে মাখলো নতুন শিশু।
শুক্রবার (৭ আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানহাট মোড়ে। ব্যস্ত রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অসহায় মা ও নবজাতকের জন্য এসময় সহায় হয়ে এলো ট্রাফিক পুলিশ। নারী ও তার সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দিল তারা।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর ১২টার দিকে দেওয়ানহাট মোড়ে পুলিশ বক্সের বিপরীত পাশ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ আছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট জাহিদুর রহমান বলেন, সকালে ওই মোড়ে দায়িত্ব ছিল আমাদের। হঠাৎ কনস্টেবল এসে বলল, ‘‘স্যার রাস্তায় বাবু হয়েছে।” তার কথা শুনে দৌড়ে গিয়ে দেখি সড়কেই নবজাতকের জন্ম দিয়েছেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক নারী। এরপর ওয়াকিটকিতে সাহায্যের জন্য বলি। সে সময় জেলা পুলিশের একটি অ্যাম্বুলেন্স ওই সড়ক দিয়ে যাচ্ছিল। সেটিকে থামিয়ে পরে মা ও নবজাতককে হাসপাতালে পৌঁছাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন ভারসাম্যহীন ওই নারী। একসময় সড়কেই সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তবে পথচারীদের কেউ এগিয়ে আসেনি। তার চিৎকার শুনে এক পুলিশ সদস্য এগিয়ে যান। পরে আরও কয়েকজন এসে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় ওই নারীকে। অ্যাম্বুলেন্সে একজন সার্জেন্ট ছিলেন।
সার্জেন্ট জাহিদুর রহমান বলেন, সেখানে আমি, সার্জেন্ট আবদুল্লাহ আল মুজাহিদ ও কনস্টেবল মহিউদ্দিন ছিলাম। বাচ্চাটা সড়কে পড়ে ছিল। আমরা আশপাশে নারী পথচারীদের অনুরোধ করছিলাম ওই নারীকে ঢেকে দেওয়ার জন্য। অনেক অনুরোধের পর দুজন এগিয়ে আসেন। তাঁদের সহায়তায় মা ও সন্তানকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলি।