ইতিহাসের সবচেয়ে বড় হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে গুগল। ফাঁস হয়ে গেছে গুগলের গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্যভান্ডার। এতে ঝুঁকিতে পড়েছেন প্রায় ২৫০ কোটি জিমেইল ব্যবহারকারী।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, তথ্য ফাঁসের এ ঘটনা জিমেইল ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ও গোপনীয়তার ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুনে গুগলের এক কর্মীকে বিভ্রান্ত করে সেলসফোর্স ক্লাউড প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করে হ্যাকার গ্রুপ শাইনি হান্টারস। এরপর গোপনে গুগলের তথ্যভান্ডার থেকে বিপুল পরিমাণ ব্যবসায়িক নথি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম ও গ্রাহকের তথ্য চুরি করে তারা। চুরি করা তথ্য কাজে লাগিয়ে জিমেইল ব্যবহারকারীদের কাছে গুগল কর্মী পরিচয়ে ভুয়া ই-মেইল পাঠানোর পাশাপাশি ফোনকল করে লগইন তথ্য বা নিরাপত্তা কোড সংগ্রহ করছে হ্যাকাররা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক জিমেইল ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৬৫০ এরিয়া কোড ব্যবহার করে প্রতারকরা ফোনকল করছে এবং পাসওয়ার্ড রিসেট করতে চাপ দিচ্ছে। ফলে অনেক ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্ট হারাচ্ছেন বা ব্যক্তিগত তথ্য চুরির শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জেমস নাইট জানিয়েছেন, গুগলের তথ্যভান্ডার থেকে তথ্য চুরি হওয়ার পর ফিশিং আক্রমণ দ্রুত বেড়েছে। হ্যাকাররা গুগলের কর্মী পরিচয়ে ফোনকল করছে বা বার্তা পাঠাচ্ছে। এ ধরনের যোগাযোগে ব্যবহারকারীদের কোনোভাবেই আস্থা রাখা উচিত নয়। জিমেইল ব্যবহারকারীদের অবিলম্বে লগইন সেটিংস পরীক্ষা করে শক্তিশালী ও জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।
সেলসফোর্স মূলত গ্রাহকের তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে এটি আরও বিস্তৃত কাজে ব্যবহার করা হয়। গুগলও জিমেইল ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল তৈরির জন্য এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। ফলে হ্যাকড হওয়ার সময় তথ্যভান্ডারটিতে প্রায় ২৫০ কোটি রেকর্ড জমা ছিল।
গুগলের তথ্যভান্ডারের নিরাপত্তা ত্রুটি থাকার বিষয়ে জেমস নাইট বলেন, গুগল তার নিরাপত্তায় বিপুল অর্থ ব্যয় করে, এমনকি সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত কিনেছে প্রতিষ্ঠানটি। তারপরও এত বড় ত্রুটি থেকে গেল, যা হ্যাকাররা কাজে লাগিয়েছে। এসব ই-মেইল ঠিকানা এখন তাদের জন্য সোনার খনি।
গুগল অবশ্য জানিয়েছে, তথ্যভান্ডারে থাকা বিভিন্ন তথ্য চুরি হলেও ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড নিরাপদ রয়েছে। তবে, কতজন ব্যবহারকারী এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা প্রকাশ করেনি গুগল। গুগলের মুখপাত্র মার্ক কারায়ানও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।