শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ, হেফাজতের হুঁশিয়ারি

বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ, হেফাজতের হুঁশিয়ারি

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারির পর এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার না করলে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে আলোচিত সংগঠনটি।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন সংগঠনের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমান। বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে এই গেজেট বাতিল করে সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা করা না হলে গণআন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসলামে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ। তাছাড়া সংগীত কোনো মৌলিক শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত নয়। বাংলাদেশের মতো মুসলিম-অধ্যুষিত দেশে মুসলিম অভিভাবকদের মতামত না নিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত শিক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার কোনো সরকারের নেই। অবিলম্বে এই গেজেট বাতিল করে প্রাথমিক স্তরে সঙ্গীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা করা না হলে আমরা দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে রাজপথে গণআন্দোলন গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ। মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামি মূল্যবোধ ও ঈমান রক্ষার প্রশ্নে আমরা বৃহত্তর ইসলামি জনতাকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

তারা আরও বলেন, এলজিবিটি ও গানবাদ্য ঢুকিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম শিশু-কিশোরদের ইসলামি মূল্যবোধ থেকে দূরে রাখার ডি-ইসলামাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমল থেকেই ছিল। দুঃখজনকভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগে সেই পুরনো ইসলামবিরোধী এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়নে নেমেছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চেপে বসা পাশ্চাত্যের উচ্ছিষ্টভোগী সুশীল কিছু এনজিওকর্মী।

হেফাজত নেতারা বলেন, সকল ইসলামি দলের পক্ষ থেকে প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি অনেক পুরোনো। সেটি উপেক্ষা করে উল্টো সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা একটি নিশ্চিত ইসলামবিরোধী পদক্ষেপ। তাছাড়া বাংলা, অংক ও ইংরেজির মতো মৌলিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এতটাই দুর্বল যে, অনেক অভিভাবক এখন স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে তাদের সন্তানদের মাদরাসায় ভর্তি করাচ্ছেন। এ নিয়ে কিছু সেক্যুলার মিডিয়ার হা-হুতাশও আমরা দেখেছি। সরকারের উচিত, প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ মৌলিক শিক্ষার মান বাড়াতে সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা।


হেফাজতের আমির ও মহাসচিব বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অগণিত মাদরাসা শিক্ষার্থী ও আলেম শহীদ হয়েছেন। ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা করা হলে মাদারাসা শিক্ষিতদের কর্মসংস্থান ঘটবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ইসলামি মূল্যবোধ ও রাসুল সা.-এর সম্মান রক্ষায় যারা জীবন দেয়, তাদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ কিছু করণীয় অবশ্যই সরকারের রয়েছে। আমরা আশা করি, সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে সরকার অতিসত্বর প্রাথমিক স্তরে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা করবে। আমরা চাই না আলেম-ওলামার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হোক।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ