রাজধানীর একটি বাসা থেকে এক নারী গণমাধ্যমকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নতুন অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা স্ট্রিমের কর্মী ছিলেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানা গেছে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ওই নারীর পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পুলিশ ওই হাসপাতাল থেকে গতকাল তার মরদে উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে, তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। তার পরিবার এখনো থানায় কোনো অভিযোগ করেনি।
ওই নারী অনলাইন সংবাদমাধ্যম ঢাকা স্ট্রিমে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সম্প্রতি ঢাকা স্ট্রিমের বাংলা কনটেন্ট এডিটর আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে যৌননিপীড়নের অভিযোগকারীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যে জানা যায়।
এ ব্যাপারে আলতাফ শাহনেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজ পাঠিয়েও কোনো ফিরতি বার্তা মেলেনি।
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে শাস্তির পরিবর্তে চাকরিতে পুনর্বহাল করার কথা বলা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তার মধ্যে এই নারী সংবাদকর্মীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। তাতে বলা হয়েছে, এমন সব ঘটনায় কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ‘আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ও। এই বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন অধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, শাহীন আনাম, শীপা হাফিজা, রেখা সাহা প্রমুখ।
এদিন বিকেল চারটার দিকে ঘটনার বিষয়ে ঢাকা স্ট্রিমের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের ব্যবস্থাপক পি এম সজল আহমেদের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ১৩ জুলাই অভিযোগ জমা পড়ে। পরে আলতাফ শাহনেওয়াজকে বার্তাকক্ষ থেকে প্রত্যাহার করা হয় এবং অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে সহকর্মীদের সঙ্গে আলতাফ শাহনেওয়াজের কিছু ক্ষেত্রে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রমাণ পাওয়া সাপেক্ষে তাকে বার্তাকক্ষ থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এসব সিদ্ধান্তে কর্মীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
ওই নারীর নাম উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, তার মৃত্যুর সঙ্গে আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনো সম্পর্ক নেই। তিন মাস আগের অভিযোগকে কেন্দ্র করে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।