যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কার্যক্রম বন্ধ (শাটডাউন) চলমান থাকার কারণে শুক্রবার একদিনেই পাঁচ হাজারের বেশি ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্বিত হয়েছে। আকাশপথে চাপ কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) ৪০টি বড় বিমানবন্দরে ফ্লাইট সংখ্যা কমানোর জরুরি নির্দেশ জারি করেছে।
এই নির্দেশ অনুযায়ী, এখন ফ্লাইট ৪% কমানো হয়েছে এবং আগামী সপ্তাহের শেষে তা ১০%-এ পৌঁছাতে পারে। এর ফলে নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো ও ওয়াশিংটন ডিসির মতো প্রধান বিমানবন্দরগুলোতে ভ্রমণ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা বর্তমানে বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বেতন না পেয়ে অনেকেই মানসিক চাপে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন এবং কেউ কেউ সংসার চালাতে পার্ট-টাইম চাকরি নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জাতীয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিক ড্যানিয়েলস জানিয়েছেন, তাদের কর্মীদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলি বানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, সমস্যা আরও বাড়বে। নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে যা যা প্রয়োজন, আমরা তা করব; কিন্তু নিজেদের পকেটে টাকা ভরতে পারব না। সরকার খুলতে কংগ্রেসেরই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এখনও প্রভাবিত হয়নি, তবে সরকার বন্ধ থাকলে তা পরিবর্তন হতে পারে।’
বিমানবন্দরে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন, ভিড় ও হতাশার ছবি দেখা গেছে। অনেক যাত্রী বিকল্প হিসেবে ট্রেন বা গাড়ি ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
এই নিয়মটি যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি বৃহত্তম বিমানবন্দরে চালু করা হয়েছে, যাতে বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাওয়া এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার ও অন্যান্য ফেডারেল কর্মীদের ওপর চাপ কিছুটা কমানো যায়।
৩৮ দিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ এই শাটডাউন কবে শেষ হবে তা এখনও অনিশ্চিত। তবে কংগ্রেসে কিছুটা অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার ডেমোক্র্যাটরা একটি অর্থায়ন বিল প্রস্তাব করলেও রিপাবলিকান সমর্থন না থাকায় তা পাস হওয়ার সম্ভাবনা কম। সিনেটে ৬০ ভোট প্রয়োজন, যেখানে বর্তমানে রিপাবলিকান ৫৩ এবং ডেমোক্র্যাট ৪৭ জন সদস্য রয়েছেন।
ডেমোক্র্যাটরা দাবি করছে, স্বল্প আয়ের নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য ভর্তুকি বাড়াতে হবে; অন্যদিকে রিপাবলিকানরা অভিযোগ করছে, ডেমোক্র্যাটরা রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে।
সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা জন থুন জানিয়েছেন, সপ্তাহান্তে আলোচনা চলবে এবং আইনপ্রণেতাদের ভোটের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও ফিলিবাস্টার নিয়ম বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে রিপাবলিকানরা ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন ছাড়াই বিল পাস করতে পারে। তবে দুই দলের বেশিরভাগ সিনেটরই এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করছেন।
ট্রাম্প ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, ‘সিনেটের উচিত নয় শহর ছেড়ে যাওয়া যতক্ষণ না তারা ডেমোক্র্যাটদের শাটডাউন শেষের কোনো চুক্তিতে পৌঁছায়। যদি না পারে, তাহলে রিপাবলিকানদের উচিত অবিলম্বে ফিলিবাস্টার বাতিল করা এবং আমেরিকান কর্মীদের পাশে দাঁড়ানো।’
সূত্র : বিবিসি
ডেস্ক | বাংলাবাজার পত্রিকা.কম

















