শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

মাদক ব্যাবসায়ীকে গ্রেফতারে সহযোগিতা করায় নারীকে হত্যা

মাদক ব্যাবসায়ীকে গ্রেফতারে সহযোগিতা করায় নারীকে হত্যা

সাভারের বিরুলিয়ায় মাদক কারবারি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও আরেক মাদক কারবারির স্ত্রীকে গ্রেফতারের জেরে গোয়েন্দা পুলিশের সোর্স সীমা বেগম (৪২) নামের এক নারীকে হত্যার মরদেহ মাটিচাপা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক মাদক কারবারিকে আটক করেছে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টার দিকে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খনিজনগর এলাকার মাদক কারবারি স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে রোববার (২ জুন) নিখোঁজ হন সীমা বেগম।

নিহত সীমা বেগম মাদারীপুরের শিবচর থানার মুন্সিকাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামীর নাম জাহাঙ্গীর খান। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হামিদ মিয়াকে মাদকসহ গ্রেফতারের ডিবি পুলিশকে সহযোগিতা করেছিলেন।

আটক ব্যক্তির নাম সাইফুল ইসলাম। তিনি সাভারের ইমান্দিপুর এলাকার মাদক কারবারি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে নিহত সীমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এলাকাবাসী জানায়,খনিজনগর ও কালিয়াকৈর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছিলো বিরুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হামিদ,স্বপন ও সাইফুলসহ আরো কয়েকজন। পরে ওই নারী মাদক ব্যবসার অভিযোগে স্বপন ও সাইফুলকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে তথ্য দিলে তার উপরে ক্ষীপ্ত হয় তারা। এর জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। এর এক মাস আগে মাদক ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা হামিদকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এখনো তিনি মাদক মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন। সরেজমিনে দেখা যায়,মাদক ব্যবসায়ী স্বপন খনিজনগর এলাকায় একটি নির্জন জায়গায় ডুপ্লেক্স সিষ্টেম একটি এক তলা বাড়ি করেছেন। বাড়ির সামনে একটি পুকুর রয়েছেন। দিন রাত তিনি সেখানে মাদক ব্যবসার পাশাপাশি অনেক অপরাধ মুলক কাজ করতেন। এলাকাটি ঘনবসতি না হওয়ায় মানুষজনের তেমন যাতায়েত ছিলো সেখানে তেমন। যার ফলে অপরাধীরা বেপোয়ারা ছিলেন।

নিহতের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, ‘গত ১৩ মে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম স্বপনের বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় মাদকসহ স্বপনের স্ত্রী ও যুবলীগ নেতা হামিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় স্বপন পালিয়ে যান। এর কিছুদিন পর মা আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আমাকে মারার জন্য স্বপন লোকজন ঠিক করেছে’। এর দুদিন পর থেকেই আমার মা নিখোঁজ ছিলেন। আজ স্বপনের বাড়ির পাশ থেকে আমার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডিবির অভিযানে আমার মা নাকি সহযোগিতা করেছিলেন। ডিবি নাকি আমার মায়ের কাছে স্বপনের বাড়ি কোথায় জানতে চেয়েছিল। মা স্বপনের বাড়ি দেখিয়ে দিয়েছিলেন। এজন্য স্বপন, রেজাউল ও সাইফুলসহ আরও কয়েকজন মিলে আমার মাকে হত্যা করে মাটিচাপা দেন।’

পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে মাদক কারবারি সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিরুলিয়ার ওই এলাকা থেকে সীমা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, আমরা জেনেছি সীমা বেগম র‌্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। আমরাও মাদক উদ্ধারে তার সহযোগিতা নিয়েছি। তাকে হত্যাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন