বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম

‘জুলাই ঐক্য’র ‘মার্চ টু হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

‘জুলাই ঐক্য’র ‘মার্চ টু হাইকমিশন’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়া ও ভারতীয় প্রক্সি রাজনৈতিক দল, মিডিয়া লীগ ও সরকারি কর্মকর্তাদের অব্যাহত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ‘মার্চ টু হাইকমিশন’ কর্মসূচির শুরুতেই বাধা দিয়েছে পুলিশ।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার পর থেকে রামপুরা ব্রিজে জড়ো হয় চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট ধারণ করা ঐক্যবদ্ধ মোর্চা ‘জুলাই ঐক্য’। এতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, লং মার্চ এগোতে না পাড়ায় জুলাই ঐক্যের লোকজন প্রগতী সরণিতে অবস্থান নেন। এ সময় তারা ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। এছাড়া ইনকিলাব মঞ্চের শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তা‌রের দাবি জানান।

আন্দোলনকারীদের একজন শিহাব জানান, তারা সরকারকে জানান দিতে চান যে, দেশের মানুষ ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিপক্ষে। তাই তারা মার্চ টু হাইকমিশন কর্মসূচি নিয়েছেন।

এর আগে চলমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে (বুধবার) দুপুর ২টা থেকে রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

সেখানে বলা হয়, “চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে আপনাদের নজরে আনা যাচ্ছে যমুনা ফিউচার পার্ক ঢাকার আইভ্যাক আজ দুপুর ২টায় বন্ধ করা হবে। আজকের দিনে ভিসা আবেদন জমার স্লট যাদের রয়েছে, তাদেরকে পরবর্তী অন্যদিনে স্লট দেওয়া হবে।”

আইভ্যাকের ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘নিরাপত্তার কারণে’ দিনের কার্যক্রম বন্ধের কথা বলা হয়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “তাদের হোসেন মার্কেটের সামনে আটকে দেওয়া হয়েছে। সেখানে তারা বক্তব্য রাখছে।”


এদিকে ‘জুলাই ঐক্য’র এই কর্মসূচির জেরে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাই কমিশনারকে তলব করে ‘বাংলাদেশের ক্রমাবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জোরালো উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বুধবার ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কিছু উগ্রবাদী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডও বিশেষভাবে তার নজরে আনা হয়েছে, যারা ঢাকার ভারতীয় মিশনকে কেন্দ্র করে একটি নিরাপত্তা পরিস্থিতি তৈরির ঘোষণা দিয়েছে।”

ভারত বলেছে, “বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে উগ্রবাদী শক্তি যে মিথ্যা বয়ান তৈরি করতে চায়, ভারত তা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, অন্তর্বর্তী সরকার এর বিস্তারিত তদন্তও করেনি আর এসব ঘটনায় অর্থবহ কোনো প্রমাণও ভারতের কাছে দেয়নি।”


এর আগে সোমবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল।


সেদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।


জুলাই অভ্যুত্থান দমনের চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধে গত ১৭ নভেম্বর এই দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তারা ভারতে অবস্থান করছেন।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ