সোমবার, ৫ মে, ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত আরও ৪০ ফিলিস্তিনি

গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত আরও ৪০ ফিলিস্তিনি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় হামাস উৎখাত আর তাদের কবল থেকে জিম্মি উদ্ধারের নামে ইসরায়েলের নির্বিচার গণহত্যা চলছেই। প্রতিদিনই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা; দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে লাশের মিছিল। নিরাপদ বলে কোনো স্থান বাকি নেই গাজাবাসীর জন্য। একদিকে আকাশ ও স্থল অভিযান, অন্যদিকে ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ; গাজা যেন সাক্ষাৎ নরক হয়ে উঠেছে তার বাসিন্দাদের জন্য। এরই মধ্যে গাজায় সামরিক অভিযানের মাত্রা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন।

এদিকে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় আরও অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫২ হাজার ৫৪০ ছাড়িয়ে গেছে।

এছাড়া গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ২৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

রোববার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে ভূখণ্ডটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ হাজার ৫৪৫ জনে পৌঁছেছে। 

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি আক্রমণে আহত হওয়া আরও ১২৫ জনকে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৯১ জনে পৌঁছেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গাজায় ভয়াবহ এক অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাস সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তারপর প্রায় দু’মাস গাজায় কম-বেশি শান্তি বজায় ছিল; কিন্তু গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের প্রশ্নে হামাসের মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে মার্চ মাসের তৃতীয় গত সপ্তাহ থেকে ফের গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৬ হাজার ৩২৫ জন আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।

যুদ্ধবিরতি পুনরায় কার্যকর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে মিশর এবং কাতার। তবে, ইসরায়েল ও হামাস কেউই নিজেদের মূল দাবি থেকে সরে আসেনি। কার্যকর চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থতার জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে আসছে।


ইসরায়েল বলছে, গাজায় এখনও ৫৯ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে এবং হামাসকে নিরস্ত্র করে ভবিষ্যতে গাজার শাসন থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া না হলে কোনও চুক্তি সম্ভব নয়। অন্যদিকে, হামাসের দাবি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার না হলে আর কোনও বন্দি বিনিময় চুক্তি হবে না।


চুক্তির বিষয়ে হামাসকে দোষারোপ করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মিশরের প্রস্তাবিত চুক্তি তারা প্রত্যাখ্যান করেনি। হামাসই বরং চুক্তি সম্পাদনের পথে বাধা তৈরি করছে।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ