শনিবার, ৪ মে, ২০২৪

মুক্তির আনন্দে সিক্ত ফিলিস্তিনিরা

মুক্তির আনন্দে সিক্ত ফিলিস্তিনিরা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চারদিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় শুক্রবার ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ৩৯ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু নিজ ভূমিতে ফিরেছেন। এই খুশি উদযাপন করতে ওইদিন আতশবাজি ফুটিয়ে তাদের বরণ করেন ফিলিস্তিনিরা। প্রায় দুই মাস ধরে চলমান সহিংসতায় এই প্রথমবার গোলাবারুদের পরিবর্তে আতশবাজির আলোতে আলোকিত হলো ফিলিস্তিনের রাতের আকাশ। বার্তাসংস্থা এএফপি শনিবার এই খবর প্রকাশ করেছে।

দীর্ঘ কারাবাসে থাকা স্বজনদের বরণ করতে শুক্রবার বাধ ভাঙ্গা আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা। এসময় ফিলিস্তিনি এবং হামাসের পতাকা হাতে বন্দি স্বজনদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন তারা। সাঁজোয়া যানের বহরের সঙ্গে কাফিয়েহ স্কার্ফসহ দুটি সাদা কোচ বন্দিদের নিয়ে ওফার সামরিক ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে এলে, উল্লাসে মেতে ওঠে উৎসুক জনতা। তবে এই আনন্দের মাঝেও তাদের হৃদয়ের যে ক্ষতের দাগ তা এক মুহূর্তের জন্যও ভুলে যাননি তারা। স্বজনদের দেখতেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ অশ্রু আনন্দের, এ অশ্রু স্বজনদের হারানোর বেদনার। 

মুক্তি পাওয়া বন্দিদের একজন ২৪ বছর বয়সী মারাহ বাকির। গাজা উপত্যকা জুড়ে প্রায় ১৫ হাজার নিহত বেসামরিকদের কথা উল্লেখ করে এএফপিকে তিনি বলেন, ‘মুক্তি পেয়ে আমি খুশি। তবে আমার এ মুক্তি শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে।' গত আট বছরের বেশি সময় ইসরাইলের কারাগারে বন্দি থাকা বাকির বলেন, ‘কারাগারের চার দেয়াল’ থেকে মুক্তি পাওয়াটা সত্যিই চমৎকার।’

পূর্ব জেরুজালেমের বেইত হানিনায় তার পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার পর এএফপিকে বাকির জানিয়েছেন, ‘কারাগারে আমি আমার শৈশব ও কৈশোর কাটিয়েছি, আমার বাবা-মা এবং তাদের স্নেহ থেকে অনেক দূর ছিলাম। একটি নিপীড়ক রাষ্ট্রের কাছে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না।’ গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তির আওতায় ইসরাইলের ১৩ জিম্মিকে হস্তান্তর করা হলে এর বিনিময়ে মোট ৩৯ জন ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের মতে, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরাইলি নিহত হয়, যা ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় মৃত্যুর সংখ্যা।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন