আজ বৃহস্পতিবার, ৯ জিলহজ, পবিত্র হজের দিন—ইয়াওমুল আরাফা। আরাফার বিশাল ময়দান মুখরিত হয়ে উঠেছে তালবিয়ার মধুর ধ্বনিতে— “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিই’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারীকা লাক।”
মহান আল্লাহর একত্ব ও মহত্ত্বের ঘোষণায় আকাশ-বাতাস প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এক কণ্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে: “আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির। আপনার কোনো শরিক নেই। সমস্ত প্রশংসা ও নিয়ামত একমাত্র আপনার। সমস্ত রাজত্ব আপনারই।”
বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মিলন পবিত্র হজ। আজ সকাল থেকেই আরাফার প্রান্তর পবিত্রতায় আচ্ছন্ন। শুভ্র এহরামে দুই খণ্ড কাপড়ে আচ্ছাদিত প্রায় ২৫ লক্ষাধিক হাজি আরাফার ময়দানে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশ থেকে এবার হজে অংশ নিয়েছেন ৮৭ হাজারেরও বেশি হাজি।
আজ ফজরের নামাজের পর থেকে আরাফার ময়দানে জড়ো হন হাজিরা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাঁরা এখানে অবস্থান করে আল্লাহর জিকির, ইবাদত ও দোআয় মশগুল থাকবেন। আরাফার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত মসজিদে নামিরা থেকে হজের ঐতিহাসিক খুতবা প্রদান করবেন মসজিদুল হারামের খতিব এবং সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য ড. শায়খ সালেহ বিন হুমায়েদ।
প্রতি বছরের মতো এবারও হজের খুতবা অনুবাদ করা হবে বিভিন্ন ভাষায়। বাংলা অনুবাদ করবেন চারজন বাংলাদেশি আলেম—ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান, মুবিনুর রহমান এবং নাজমুস সাকিব। তাঁরা সবাই মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সূর্যাস্তের পর হাজিরা মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। সেখানে মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে আদায় করবেন এবং রাতযাপন শেষে ৭০টি কংকর সংগ্রহ করবেন জামারায় শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য।
১০ জিলহজ মিনায় গিয়ে হাজিরা সম্পন্ন করবেন চারটি গুরুত্বপূর্ণ রীতিনীতি: জামারায় কংকর নিক্ষেপ, পশু কোরবানি, চুল কাটানো বা মুন্ডন, তাওয়াফে জিয়ারত (কাবা শরিফ তাওয়াফ)।
পরবর্তী দুই দিন—১১ ও ১২ জিলহজ, হাজিরা মিনায় অবস্থান করে তিনটি জামারায় কংকর নিক্ষেপ করবেন। ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে অধিকাংশ হাজি মক্কায় ফিরে যাবেন এবং বিদায়ী তাওয়াফ (তাওয়াফে বিদা) সম্পন্ন করে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন।
এদিকে. হজ পালনের অনুমতিপত্র না থাকায় ২ লাখ ৬৯ হাজার মুসল্লিকে মক্কায় প্রবেশ করতে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তাঁরা সৌদি আরবে প্রবেশ করলেও অনুমতি না থাকায় হজে অংশ নিতে পারেননি।