মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

নৌকায় ভোট করবে ১৪ দল

নৌকায় ভোট করবে ১৪ দল

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। বর্তমান সংসদে ১৪ দলীয় জোটের ১০টি আসন রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে ২০টি আসন চাইবেন বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার বিকেলে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেছেন, আসন বণ্টনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ১৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তারপর জাতীয় পার্টি আছে, বুধবার তাদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা হবে। মঙ্গলবার রাতে ইস্কাটনের বাসায় শরিক দলের তিন নেতার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

আসন বণ্টনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কবে নাগাদ পেতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে বুধবার আলাপ হবে। তারপর একটা পর্যায়ে যেতে পারব। কিছু কনফ্লিক্ট হতে পারে সেগুলোও দেখতে হবে।

তিনি বলেন, বিগত দিনে আমরা এক সঙ্গে নির্বাচন করেছি। নির্বাচন ও আন্দোলন এক সঙ্গে করি। আমরা এখনো বলছি, আমাদের নির্বাচন কিংবা আন্দোলন এক সঙ্গেই হবে। ১৪ দল জোটগতভাবে নির্বাচন করবে। সেই সিদ্ধান্তে আমরা অটুট রয়েছি। আসনের ব্যাপারে কোথায় কী করা যায়, কীভাবে আসন বণ্টন করা যায় সে ব্যাপারে আমরা আলোচনা করছি। সেই আলোচনার বিষয়বস্তু নেত্রীকে জানাব। আজকে মেনন সাহেব, ইনু সাহেব এসেছেন, আলোচনা হয়েছে, আমি কাল এই বিষয়গুলো নেত্রীকে জানাব। আলাপ করার পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত যে সিদ্ধান্তগুলো হয়েছে সেগুলো সব চূড়ান্ত নয়। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগেরও শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন। কার বিরুদ্ধে কে থাকবে, কার বিরুদ্ধে কে থাকবে না, কে প্রত্যাহার করবে, কে প্রত্যাহার করবে না, এসব বিষয়ে দ্রুত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে আমু বলেন, ১৪ দল একটি রাজনৈতিক আদর্শিক জোট। এটা ভাগাভাগির জোট নয়। ২০০১ সাল থেকে আমরা যুদ্ধ করে আসছি। ২০০৬ সালে যুদ্ধ করেছি। আমাদের কাছে কে আসন পেল, কে পেল না সেটা গুরুত্ব রাখে না। আমরা একটি আদর্শিক জোট হিসেবে কাজ করছি।

এদিকে আসন বন্টন নিয়ে ইনু বলেন, জোটের মর্যাদা সম্মান রক্ষা করে আসন বন্টনের নীতি যেনো চুড়ান্ত হয় সেটি নিয়েই আলোচনা হয়েছে, চুড়ান্ত হলে জানানো হবে। বর্তমান সংসদে ১৪ দলীয় জোটের ১০টি আসন রয়েছে। সেক্ষেত্রে জোটের প্রত্যাশা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিগুন প্রার্থী ছাড় দেয়া হবে।

তিনি বলেন, জোট নেত্রী শেখ হাসিনা সোমবারে জানিয়েছেন, জোট আছে, জোটের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। যেখানে জোটের প্রার্থী দেয়া হবে সেখানে আওয়ামী লীগের আসন ছেড়ে দেবে। দরকষা কষি হবে এটাই স্বাভাবিক। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, জোট নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের আলোচনার পর এই বার্তা স্পষ্ট যে জোট আছে এবং একসাথে নির্বাচন করবে। জোটের সাথে আসন ভাগাভাগির বিষয় সম্মানজনকভাবে নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবো। যেখানে জোটের প্রার্থী থাকবে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উটে যাবে। এখন ১৪ দলের ১০ জন সংসদ সদস্য আছে, তাই আগামীতে ২০ জন চাইবো।

তিনি আরও বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সম্পর্কে কি কৌশল নেয়া হবে সেটা জোটনেত্রীকে বিবেচনা করতে বলেছি। জোটের প্রার্থির আসনে আওয়ামী লীগের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে বিভ্রান্তি দেখা দেবে। সর্বনিম্ন কিংবা সর্বোচ্চ আসন কতো পাচ্ছি সেটা নিয়ে ভাবছি না। নির্বাচনি পরিবেশ শান্তিপূর্ণ। এমন পরিবেশ থাকলে ভোটার উপস্থিতি বেশি হবে।

হাসানুল হক ইনু বলেন, আজকের বৈঠকটি ১৪ দলের নয়, ব্যক্তি পর্যায়ের বৈঠক। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আসন ভাগাভাগি নিয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বাসায় বৈঠক করেছেন জোটের কয়েকজন নেতা। বৈঠকে আমির হোসেন আমু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার।

গত সোমবার সন্ধ্যায় আসন ভাগাভাগি নিয়ে গণভবনে জোট শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সূত্র বলছে, বৈঠকে জোট নেতারা তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী আসনের তালিকা জমা দিয়েছেন। জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু সেগুলো বৈঠকে উপস্থাপন করেন।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন