শনিবার, ৪ মে, ২০২৪

হিথ্রো এয়ারপোর্টের চেয়েও ছোট গাজার নিরাপদ এলাকা

হিথ্রো এয়ারপোর্টের চেয়েও ছোট গাজার নিরাপদ এলাকা

গাজাজুড়ে সামরিক হামলা জোরদার করছে ইসরাইল। এ পরিস্থিতিতে দেশটির সেনাবাহিনী গাজার প্রায় ২০ লাখ মানুষকে 'মানবিক অঞ্চলে’ চলে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। অথচ নিরাপদ এই অঞ্চল আয়তনে লন্ডনের হিথ্রো এয়ারপোর্টের চেয়েও ছোট। নাম আল-মাওয়াসি। খবর বিবিসির।

আল-মাওয়াসি মূলত ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ অঞ্চল। এটিতে কয়েকটি ভবন রয়েছে। অঞ্চলটির বেশিরভাগ এলাকাই মূলত বালুময় টিলা এবং কৃষি জমি নিয়ে গঠিত। আল-মাওয়াসিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস’ (আইডিএফ) ‘সেফ জোন’ (নিরাপদ অঞ্চল) বলে ঘোষণা করেছে। এর আয়তন মাত্র ৮ দশমিক ৫ বর্গ কিলোমিটার। সেখানে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত কোনও সুযোগ-সুবিধা নেই।

প্রাণ বাঁচাতে এ অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছেন রিম আবদ রাবু নামের এক ফিলিস্তিনি। তিনি কয়েক সপ্তাহ মাটিতে ঘুমিয়েই কাটিয়েছেন। এলাকার আরও চারটি পরিবারের সঙ্গে তিনি একটি তাঁবুতে থাকছেন। গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া ১৮ লাখ মানুষের মধ্যে রাবুও একজন।

ইসরাইলের হামলা থেকে বাঁচতে প্রথমে উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে খান ইউনিসে চলে যান তিনি। পরে সেখানকার আশেপাশের বাড়িগুলোতে অবিরাম বোমা হামলার মুখে তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নির্দেশানুযায়ী আল-মাওয়াসিতে আশ্রয় নেন।

বিবিসিকে রিম আবদ রাবু জানান, আল-মাওয়াসি মূলত একটি পরিত্যক্ত জায়গা। এ জায়গা মানুষের থাকার উপযোগী নয়। তিনি বলেন, এখানে ১০ দিনে পানি একবারের জন্য আসে। এমনকি বাথরুমগুলোতেও একই অবস্থা। বিদ্যুতের অবস্থাও একইরকম।

যদিও গত ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এর মুখপাত্র স্যোশাল মিডিয়ায় অন্তত ১৫ বারের মতো গাজার অধিবাসীদের আল-মাওয়াসিতে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত প্রথম নির্দেশটি দেয়া হয় গত ১৮ অক্টোবর সাবেক টুইটার এক্স-এ।

পোস্টে বলা হয়, আইডিএফ গাজার বাসিন্দাদের আল-মাওয়াসি এলাকায় ‘মানবিক অঞ্চলে’ চলে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। সেখানে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা পাঠানো হবে।

গত ২১ অক্টোবর আরেকটি পোস্টে বলা হয়, যদি আপনার জীবন এবং আপনি যাদের ভালবাসেন তাদের জীবন আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়, তাহলে ওয়াদি গাজার দক্ষিণে চলে যান। আমরা আপনাকে আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী মাওয়াসিতে মানবিক এলাকায় পৌঁছানোর পরামর্শ দিচ্ছি।

ইন্টারনেট সংযোগ খুব কম থাকার কারণে গাজার অন্যান্য অঞ্চলে নিরাপদ জায়গা খুঁজে পাওয়া মানুষের জন্য কঠিন হচ্ছে। তাছাড়া, আল-মাওয়াসি নিয়েও আইডিএফ এর নির্দেশনা বেশ কয়েকবার পরিবর্তন এসেছে। এর ফলে ঠিক কোথায় গেলে নিরাপদে থাকা যাবে সেটি বুঝতে পারা মুশকিল হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অধিবাসীরা।

সম্পাদক : জোবায়ের আহমেদ নবীন