বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তাপের মধ্যেই ধেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশচুম্বী শুল্কের চাপ। আর মাত্র চারদিন বাদেই শেষ হতে যাচ্ছে আমদানি পণ্যে বাড়তি শুল্ক স্থগিতের মেয়াদ। এ অবস্থায় এরই মধ্যে বিশ্বের ১২টি দেশের জন্য নতুন শুল্ক হার নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সংক্রান্ত চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আগামী সোমবার (৭ জুলাই) জানা যাবে কোন কোন দেশের পণ্যে নতুন শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এই চিঠিতে যত পরিমাণ শুল্ক ধরা হয়েছে, সেটিই মানতে হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
শনিবার (৫ জুলাই) নিউজার্সিতে যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা বিমানে ট্রাম্পকে এ নিয়ে প্রশ্ন করেন। তখন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি কিছু চিঠি সই করেছি। সোমবার তা পাঠানো হবে, সম্ভবত ১২টি দেশে। ভিন্ন ভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব থাকছে এসব চিঠিতে।’
নির্ধারিত ১২ দেশের নাম উল্লেখ না করলেও ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, শুল্কের হার ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। অধিকাংশ নতুন হার কার্যকর হবে আগামী ১ আগস্ট থেকে।
চলতি বছরের এপ্রিলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর অনেক দেশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করে রেখেছে। এ কারণে এসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে পারস্পরিক শুল্ক দিতে হবে।
তবে, আলোচনার সুযোগ দিতে এসব বাড়তি শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই।
বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা পিছিয়ে পড়ায় হতাশা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘চিঠি পাঠানোই ভালো। আলোচনা অনেক সময়সাপেক্ষ এবং জটিল।’
বিশ্লেষকদের ধারণা, বহু দেশের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আগের পরিকল্পনা থেকে সরে এসে প্রকৃতপক্ষে এখন একতরফাভাবে শুল্ক আরোপের পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র।
এখন পর্যন্ত কেবল যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি করতে পেরেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাজ্য ১০ শতাংশ শুল্ক ধরে রেখেছে এবং গাড়ি ও বিমান খাতে বিশেষ সুবিধা পেয়েছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তিতে তাদের পণ্যের ওপর শুল্ক ৪৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ভারতের সঙ্গে প্রত্যাশিত চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নও শুক্রবার জানিয়েছে, আলোচনায় অগ্রগতি না থাকায় তারা শুল্ক বৃদ্ধির বদলে বর্তমান অবস্থাই বজায় রাখতে চায়।