যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন ‘যদি তিনি চান’, কিন্তু সেজন্য শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেইনের নেটোতে যাওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে।
হোয়াইট হাউজে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসার কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প আরও বলেছেন, ক্রাইমিয়া উপদ্বীপও আর ফিরে পাবে না ইউক্রেইন।
ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর আট বছর আগে ২০১৪ সালে মস্কো ইউক্রেইনের ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর এক গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ার সীমান্তভুক্ত করে নেয়।
শুক্রবার আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠক করেন ট্রাম্প। এই বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউক্রেইনে যুদ্ধবিরতির দাবি ত্যাগ করে তার বদলে স্থায়ী শান্তি চুক্তির আহ্বান জানান।
রোববার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেইনের জন্য ‘নেটো-ধাঁচের’ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। ধারাবাহিকভাবে পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোতে ইউক্রেইনের যোগ দেওয়ার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
বিবিসি জানিয়েছে, রোববার রাতে নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে করা এক পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন, “ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ প্রায় তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করতে পারেন, যদি তিনি তা চান অথবা তিনি লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন।”
ট্রাম্প যোগ করে বলেন, “স্মরণ করুণ কীভাবে এটি শুরু হয়েছিল। ওবামা ক্রাইমিয়াকে দিয়ে দিয়েছে, সেটি আর ফেরত পাওয়া যাবে না (১২ বছর আগে, একটিও গুলি না ছুড়েই!), আর ইউক্রেইন নেটোতে যাচ্ছে না। কিছু জিনিস কখনোই পরিবর্তিত হয় না!!!”
জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার আগে নেটো দেশগুলো জোটটিতে কিইভের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টি ‘অপরিবর্তনীয় পথ’ বলে একমত হয়েছিল।
ইউক্রেইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার ওয়াশিংটনে জেলেনস্কির সঙ্গে যোগ দেবেন নেটোর মহাসচিব মার্ক রুটে। তাদের সঙ্গে আরও থাকবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভ্যান ডার লায়েন। তবে তাদের মধ্যে কারা হোয়াইট হাউজে যাবে তা পরিষ্কার হয়নি।
ট্রাম্প পরে তার সামাজিক মাধ্যমে বলেন, “আগামীকাল হোয়াইট হাউজে বড় দিন! একসঙ্গে এতোজন ইউরোপীয় নেতা এর আগে কখনো আসেননি। তাদের আতিথ্য দিতে পেরে আমি অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি।”
সংক্ষিপ্ত নোটিশে এতোজন রাষ্ট্রপ্রধানের যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে হাজির হওয়ার নজির আধুনিক সময়ে আর নেই। এতে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, হোয়াইট হাউজে ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে একটি সংকট সভা হতে যাচ্ছে যা নিয়ে ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
==========