তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা পুনঃআপিলের ওপর শুনানি শুরু করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করছেন- আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া, আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ২৭ আগস্ট আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন।
২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ সেই রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
পরবর্তীকালে ২০০৫ সালে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করা হলে মামলাটিতে শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট আটজন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে। তাদের মধ্যে ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মত দেন।
অপর দিকে ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি এই ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রস্তাব দেন। তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও এ ব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নেন।
সবশেষে, ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই এ সংশ্লিষ্ট গেজেট প্রকাশিত হয়।
এই রায়ের পর থেকে তিনটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর বর্তমানে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।