বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা কোনো বিশেষ দলের বিজয় চাচ্ছি না। ৮ দলের বিজয়ও চাই না, আমরা ১৮ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিজয় চাই। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আগপর্যন্ত মানুষ স্বস্তিতে কথা বলতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। বাংলাদেশের মানুষ অবিচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- কেউ মারা যায়নি। রং ছিটিয়ে রেখেছিল। মানুষ খুন করার পর আবার মানুষের রক্ত নিয়েও তাদের উপহাস। এটাই ছিল তাদের বৈশিষ্ট্য।
আওয়ামী লীগ রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল, রক্তাক্ত হাতেই ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, তারা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ওই বছরের ফেব্রুয়ারির ২৫ ও ২৬ তারিখ ঢাকার পিলখানায় বিডিআর হেডকোয়ার্টারে প্রতিশ্রুতিশীল, দেশপ্রেমিক ও চৌকস সামরিক অফিসারদের হত্যা করার মাধ্যমে তাদের শাসন শুরু করেছিল। ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলনে ছাত্র-তরুণ, যুবক, কৃষক শ্রমিকের বুকে গুলি চালিয়ে কাড়ি কাড়ি লাশ ফেলে দিয়ে যখন সামাল দিতে পারেনি। তখন বলেছিল- অমুকের কন্যা দেশ ছেড়ে পালায় না।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। কোনো ফ্যাসিবাদকে বরদাশত করা হবে না। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন- চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত আছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামী দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদের জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের আমির মাওলানা মামুনুল হক। জামায়াতে ইসলামীসহ আট দল ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করছে।
তাদের প্রধান দাবিগুলো হচ্ছে- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, জাতীয় নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, আওয়ামী লীগের গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার এবং আওয়ামী লীগের সব অপকর্মের সহযোগী জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
নিজস্ব প্রতিবেদক | বাংলাবাজার পত্রিকা.কম


















