রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

মিয়ানমারে ভোটগ্রহণ শুরু, পাঁচ বছরের অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন

মিয়ানমারে ভোটগ্রহণ শুরু, পাঁচ বছরের অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন

গৃহযুদ্ধ, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন এবং নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে তীব্র প্রশ্নের মধ্যেই মিয়ানমারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথমবার দেশটির নাগরিকরা ভোট দিচ্ছেন। তবে বিরোধী দলগুলোর অনুপস্থিতি, চলমান সংঘাত এবং সেনাশাসনের নিয়ন্ত্রণের কারণে নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

মিয়ানমারের জান্তাশাসিত নির্বাচন কমিশনের বরাতে এএফপি জানিয়েছে, ২৮ ডিসেম্বর থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আজ রোববার প্রথম ধাপে রাজধানী নেইপিদো, বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়সহ জান্তা নিয়ন্ত্রিত শহর ও গ্রামাঞ্চলে ভোটগ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে জাতীয় পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক আইনসভার জন্য ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চল ও প্রদেশে ভোটগ্রহণ হচ্ছে না। মোট ৩৩০টি টাউনশিপের মধ্যে তিন ধাপে ২৬৫টিতে ভোট নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও সেগুলোর সবটিতে জান্তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই।

২০২০ সালের নির্বাচনে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিজয়ী হয়। তবে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং ক্ষমতা দখল করেন। অভ্যুত্থানের পর এনএলডির অধিকাংশ নেতা গ্রেপ্তার হন। এনএলডি আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়, ফলে তারা এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।


এদিকে সামরিক সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) নির্বাচনী মাঠে সবচেয়ে প্রভাবশালী দল হিসেবে বিবেচিত। পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভোট শেষে এই দল সরকার গঠন করবে।


জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা ও পশ্চিমা দেশগুলো নির্বাচনের সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার টুর্ক বলেছেন, সহিংসতা ও দমন-পীড়নের পরিবেশে জনগণের মুক্ত অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। তবে জান্তা সরকার নির্বাচনকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের জন্য ‘নতুন অধ্যায়’ হিসেবে উপস্থাপন করছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলেছে, এই নির্বাচন দেশকে সংকট ও সংঘাতের বৃত্ত থেকে বের করে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নেবে।

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ