সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে ৪ জুলাই যোদ্ধার বিষপান

হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে ৪ জুলাই যোদ্ধার বিষপান

রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি থাকা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চোখ হারানো চার তরুণ বিষপান করেছেন। জানা গেছে, পকেটে করে তারা আগেই বিষ নিয়ে আসেন এবং একটি মিটিং চলাকালে হাসপাতাল পরিচালকের কক্ষে গিয়ে সেই বিষ পান করেন।

রোববার (২৫ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী।

বিষপানকারীরা হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)। পরে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে চলমান বৈঠকের সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে তার কক্ষে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই বিষপান করেন তারা। 

জুলাই গণ-আন্দোলনে চোখ হারানো আহতরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘ ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি।



হিল্লোল নামে আহত একজন বলেন, এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতেই হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না। আমাদের চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। 


হাসপাতালটির অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে ভর্তি থাকা ৪ জন আজ বিষপান করেছেন। তারা আগেই পকেটে করে বিষ নিয়ে আসে। কিন্তু আমার রুমে এসে মিটিং চলাকালীন তাদের এই কর্মকাণ্ডে খুবই অবাক হয়েছি। ঠিক কি কারণে তারা এমন করেছে আমরা কিছুই জানি না।


তিনি আরও বলেন, তাদের তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বর্তমানে তারা সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।


বিষপানের এ ঘটনায় জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা সাধারণ রোগীদের বেড ফাঁকা করে দীর্ঘ ৯ মাস ধরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাদের চিকিৎসা দিয়ে আসছি। কিন্তু তাদের এ ধরনের আচরণ আমাদের খুবই মর্মাহত করে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটা সেবা দেওয়ার, আমরা তা দিয়েছি। তারা এখন চাইলে নিজ নিজ বাসায় গিয়েই বাকি চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজটি সম্পন্ন করতে পারেন। তারপরও তারা হাসপাতালে আছেন, আমরাও আন্তরিকতার সাথে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। 

সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ