বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হৃদরোগ। ক্যানসার, লিভার ফেলিওরের মতো জটিল রোগের পাশাপাশি দ্রুত হারে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো সমস্যাও। আর তাই কীভাবে হার্ট সুস্থ রাখবেন সেই উপায় খুঁজছেন সবাই। ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের মতে, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব সাধারণ কিছু অভ্যাসে।
আমেরিকার খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. ভাস এমন পাঁচটি সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাসের কথা বলেছেন, যা নিয়মিত মেনে চললে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। চলুন এসম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই-
১. প্রতিবার খাওয়ার পর ১০–১৫ মিনিট হাঁটুন
খাওয়ার পরপরই বসে পড়া কিংবা শুয়ে পড়া হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর বদলে হালকা হাঁটার অভ্যাস করুন। এতে শরীরে রক্তপ্রবাহ উন্নত হয়, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ কমে। গবেষণা অনুযায়ী, দিনে কয়েকবার ছোট ছোট হাঁটা, একবার দীর্ঘ হাঁটার চেয়েও বেশি উপকারী হতে পারে।
২. খাবার থেকে ওমেগা-৩ গ্রহণ করতে চেষ্টা করুন
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টের জন্য উপকারী। তবে এই উপাদানটির জন্য ওষুধ না খেয়ে, প্রাকৃতিক খাবার থেকে গ্রহণ করুন। স্যামন মাছ, আখরোট, তিসির বীজ ও চিয়া সিডের মতো খাবারে প্রচুর ওমেগা-৩ থাকে। এগুলো খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে ও ধমনী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
৩. ভালো ঘুম নিশ্চিত করুন
দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুম হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। গভীর ও পরিপূর্ণ ঘুম হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। একইসঙ্গে ঘুমাতে যাওয়া, ঘুমের সময় ঘর অন্ধকার রাখা এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইস এড়িয়ে চলা ইত্যাদি অভ্যাস ভালো ঘুমের জন্য জরুরি।
৪. প্লাস্টিক এড়িয়ে কাচ বা স্টিল ব্যবহার করুন
প্লাস্টিকের বোতল বা খাবার পাত্র থেকে বিপিএ জাতীয় রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করে। এটি হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই পানি পানের জন্য কাচ বা স্টিলের বোতল ব্যবহার করুন এবং প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার গরম করা থেকে বিরত থাকুন।
৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান
হৃদরোগ অনেক সময় নীরব ঘাতক হয়ে শরীরে থাকে আর ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে। তাই বছরে অন্তত এক দুইবার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার পরীক্ষা করানো উচিত। পরিবারের কারো হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।