বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫

রক্তের গ্রুপের সঙ্গেও আছে স্ট্রোকের সম্পর্ক, বেশি ঝুঁকিতে যারা!

রক্তের গ্রুপের সঙ্গেও আছে স্ট্রোকের সম্পর্ক, বেশি ঝুঁকিতে যারা!

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী হৃদরোগ এবং স্ট্রোক। এর মধ্যে স্ট্রোকের পর বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা সবচেয়ে কম; আর বেঁচে ফিরলেও পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ধূমপান, ডায়াবেটিস, স্থূলতার কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। সেইসঙ্গে অতিরিক্ত মদ্যপান, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, মানসিক চাপ, ঘুমের সমস্যা (যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া), এবং কিছুক্ষেত্রে হৃদরোগও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। 

এছাড়া, পারিবারে কারও স্ট্রোকের ইতিহাস থাকলেও সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, জানেন কি, রক্তের গ্রুপের সঙ্গেও স্ট্রোকের ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে?

হ্যাঁ, তেমনটাই দেখা গেছে নিউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়। ২০২২ সালে প্রকাশিত সেই গবেষণার ফলাফল বলছে, রক্তের ‘এ’ গ্রুপের একটি উপধরন ‘এ১’-এর মানুষের ৬০ বছর বয়সের আগে স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যান্য রক্তের গ্রুপের মানুষের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি। এছাড়া, যাদের রক্তের গ্রুপ ‘বি’, তাদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বয়স নির্বিশেষে অন্যান্য গ্রুপের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে, যাদের রক্ত ‘ও১’ গ্রুপের, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি ১২ শতাংশ কম দেখা গেছে। 

গবেষণায় ৪৮টি জেনেটিক স্টাডির তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। এতে প্রায় ১৭ হাজার স্ট্রোক আক্রান্ত এবং প্রায় ৬ লাখ সুস্থ ব্যক্তির তথ্য অন্তর্ভুক্ত ছিল। সব অংশগ্রহণকারীর বয়স ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে ছিল।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিশেষজ্ঞ ও গবেষণার প্রধান লেখক স্টিভেন কিটনার বলেন, আমরা এখনও জানি না কেন ‘এ’ গ্রুপের রক্ত স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে, সম্ভবত এটি রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া, প্লাটলেট, রক্তনালির অভ্যন্তরীণ কোষ এবং অন্যান্য প্রোটিনের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, জাপান, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছিলেন। তবে, ইউরোপীয় বংশের বাইরে লোকেরা মাত্র ৩৫ শতাংশ। তাই ভবিষ্যতে আরও বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর ওপর গবেষণা করলে ফলাফল আরও স্পষ্ট হবে।

এ ব্যাপারে গবেষক কিটনার বলেন, আমাদের আরও গভীর গবেষণা প্রয়োজন, যাতে স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধির পেছনে দায়ী কারণগুলো আরও ভালোভাবে বোঝা যায়।


সম্পাদক : অপূর্ব আহমেদ